স্বর্ণ: বিক্রির সময় দাম কেটে রাখা হয় কেন? বিক্রির ক্ষেত্রে যা জানা জরুরি - BBC News বাংলা (2024)

স্বর্ণ: বিক্রির সময় দাম কেটে রাখা হয় কেন? বিক্রির ক্ষেত্রে যা জানা জরুরি - BBC News বাংলা (1)

ছবির উৎস, Getty Images

Article information
  • Author, সানজানা চৌধুরী
  • Role, বিবিসি নিউজ বাংলা

বাংলাদেশে বছর বছর স্বর্ণের দাম বাড়ার কারণে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে অনেকেই স্বর্ণ কিনে জমিয়ে রাখেন ভবিষ্যতে বিক্রি করে লাভ করার আশায়।

দেশটির স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সমিতি বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)-এর তথ্যমতে, বর্তমানে পুরানো স্বর্ণ বিক্রির ক্ষেত্রে বর্তমান ওজন থেকে ১৫ শতাংশ ওজন বাদ দিয়ে দাম ধরা হয়েছে।

এদিকে কেউ যদি স্বর্ণ বিনিময় করতে চান অর্থাৎ পুরানো স্বর্ণ দিয়ে নতুন স্বর্ণ কিনতে চান তাহলে ওই পুরানো স্বর্ণের ১০ শতাংশ ওজন বাদ দিয়ে যে দাম থাকে, ওই দামের নতুন স্বর্ণ নেওয়া যাবে।

চলতি বছরের ৮ই মে থেকে এই নিয়ম কার্যকর হয়। তার আগ পর্যন্ত পুরানো স্বর্ণ বিক্রির ক্ষেত্রে ১৩ শতাংশ ও বিনিময়ের ক্ষেত্রে নয় শতাংশ ওজন বাদ দেয়া হতো।

বর্তমানে ১৫ শতাংশ বা ১০ শতাংশ কর্তনের বাইরে কেনার সময় দেওয়া মজুরি ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বাবদ যে মূল্য পরিশোধ হয়েছে সেটাও বাদ যাবে।

বাজুসের সাবেক সভাপতি এবং বাংলা গোল্ড প্রাইভেট লিমিটেডের লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনামুল হক খান বলেছেন, “ভ্যাটের ক্ষেত্রে আপনি যেটা পরিশোধ করেছেন, আনুমানিক স্বর্ণের দামের পাঁচ শতাংশ কাটা যাবে। কারণ সেটা আমরা নেইনি। এটা সরকার নিয়েছে।”

“আর মজুরির হার একেক গহনার ক্ষেত্রে একেক রকম। সাধারণত পাঁচ শতাংশ মজুরি হিসেবে কাটা যায়। নকশা ভেদে এটা ১০ শতাংশও হতে পারে।”

বাজুসের সূত্র মতে, স্বর্ণের দামের ছয় শতাংশ মজুরি হিসেবে কাটা হয়ে থাকে।

মূলত স্বর্ণের দোকানগুলোর পরিচালনা খরচ, সরকারের কর, দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন, লাইটিং, স্বর্ণ প্রক্রিয়াজাতকরণের খরচ, কারিগরের খরচ, স্বর্ণ নকশা করতে গেলে কিছু ক্ষয় হয় এমন বিভিন্ন আনুষঙ্গিক খরচ এবং স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের লাভ এই মজুরির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে।

সেইসাথে মিনাকারী করা গহনা হলে বিক্রির সময় মিনার ওজনও বাদ যাবে।

অনেক সময় স্বর্ণ দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে ত্বক, ঘাম, বাইরের আবহাওয়া, পানি-বাতাস, এসিড এমন নানা কিছুর সংস্পর্শে ক্ষয়ে যায়। এবং আগে যত ওজন ছিল, তার চেয়ে ওজন কমে যায়।

তবে মাঝে মাঝে অল্প সময়ের জন্য গয়না পরলে ওজনে তারতম্য হয় না।

এই মূল্য কর্তনের হিসাব ২২ , ২১ ও ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ বিক্রি করার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তবে সনাতন স্বর্ণের দামের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

তবে কিছু কিছু দোকান কোনও কর্তন ছাড়াই তিন দিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত এক্সচেঞ্জ বা বদলে নেওয়ার সুযোগ রাখে।

আরও পড়তে পারেন
  • লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়া সোনার ভরির দাম আর কত বাড়বে?

  • কেমন হবে এ বছরের স্বর্ণের বাজার?

  • স্বর্ণের দাম কীভাবে নির্ধারণ করা হয়?

স্বর্ণ বিক্রির ক্ষেত্রে বিশুদ্ধতা যাচাই

স্বর্ণ বিক্রি করার ক্ষেত্রে কত দাম পাওয়া যাবে সেটা নির্ভর করে এর বিশুদ্ধতার উপর।

এক্ষেত্রে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও স্বর্ণ কেনাবেচার ক্ষেত্রে বিশুদ্ধতা যাচাই ও দাম নির্ধারণ ক্যারেট অনুযায়ী হয়।

বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশটিতে স্বর্ণের চারটি মান রয়েছে। যথাক্রমে ১৮, ২১, ২২ ও ২৪ ক্যারেট। যত বেশি ক্যারেট স্বর্ণ তত বেশি বিশুদ্ধ।

এর মধ্যে ১৮, ২১ ও ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে থাকে বাজুস। সেইসাথে পুরনো স্বর্ণ বিক্রির দামও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।

স্বর্ণ বিক্রি করতে গেলে সবার আগে পরীক্ষা করে দেখা হয় এতে কী পরিমাণ খাঁটি স্বর্ণ আছে আর কী পরিমাণ খাদ।

এক্ষেত্রে যিনি বিক্রি করবেন, তার উচিত হবে নির্ভরযোগ্য গহনার দোকানে স্বর্ণের বিশুদ্ধতা যাচাই করে প্রকৃত দাম জেনে লেনদেন করা।

এক সময় কষ্টিপাথর দিয়ে স্বর্ণের বিশুদ্ধতা পরিমাপ করা হতো। কিন্তু বর্তমানে স্বর্ণ নীতিমালা অনুযায়ী, পরীক্ষাগারে একাধিক যন্ত্রের সাহায্যে পাঁচ ধাপে স্বর্ণের বিশুদ্ধতা যাচাই করা হয়।

প্রথমে বিক্রি করতে আনা স্বর্ণটি এক্স-রে করে প্রাথমিক ধারণা নেওয়া হয়। তারপর এর বিভিন্ন অংশ থেকে নমুনা নিয়ে সেটি গলিয়ে বা ফায়ার টেস্ট করে পরীক্ষা করা হয়।

তারপর মাইক্রো ব্যালেন্স মেশিনে ওজন করে নির্ণয় করা হয় কতটুকু বিশুদ্ধ স্বর্ণ আছে।

এছাড়া হলমার্ক পদ্ধতিও গহনার বিশুদ্ধতা যাচাইয়ের সরকার নির্দেশিত আধুনিক মাধ্যম।

বাজুসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগারওয়াল জানান, হলমার্ক হলো এই গহনায় কতটা বিশুদ্ধ স্বর্ণ আছে তা খোদাই করে লিখে দেওয়া।

স্বর্ণ যত ক্যারেট হয় সেটা কোম্পানির লোগো ও কোড নম্বরসহ ওই গহনায় খোদাই করে বা লেজার দিয়ে মার্কিং করে দেওয়া হয়।

শুধুমাত্র বাজুসের অনুমোদিত সদস্যরা সরকারের লাইসেন্সের প্রেক্ষিতে এই মার্কিং করতে পারে।

তাই কারও যদি স্বর্ণ হলমার্ক করা থাকে তাহলে সেটি দেশে বিদেশে কোথাও বিক্রি করতে গেলে তার আর প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।

এভাবে ক্যারেট নিশ্চিত হওয়ার পর সেটা ওজন করে নির্দিষ্ট অংশ কর্তন করে বর্তমান বাজার দাম হিসাব করে লেনদেন সম্পন্ন করা হয়।

স্বর্ণ: বিক্রির সময় দাম কেটে রাখা হয় কেন? বিক্রির ক্ষেত্রে যা জানা জরুরি - BBC News বাংলা (3)

ছবির উৎস, Getty Images

কোন স্বর্ণ বিক্রিতে কত টাকা?

সাধারণত ২৪ ক্যারেট বলতে নিখাদ স্বর্ণ বোঝায়। বাংলাদেশে বর্তমানে যত স্বর্ণের গহনা বিক্রি হয় সেগুলোর বেশিরভাগই ২২, ২১ বা ১৮ ক্যারেটের।

বাজুসের মিডিয়া ও কমিউনিকেশন্স স্পেশালিস্ট রাশেদ রহমান অমিত বিবিসি বাংলাকে জানান, ২২ ক্যারেটের এক ভরি গহনায় বিশুদ্ধ স্বর্ণ থাকে ১৪ আনা চার রতি (৯১ দশমিক ছয় শতাংশ)। ২১ ক্যারেটে ১৪ আনা (৮৭ দশমিক পাঁচ শতাংশ) এবং ১৮ ক্যারেটে পাওয়া যায় ১২ আনা (৭৫ শতাংশ) বিশুদ্ধ স্বর্ণ।

আরও সহজ করে বললে ২২ ক্যারেটে খাদ আছে নয় শতাংশ, ২১ ক্যারেটে ১২ শতাংশ এবং ১৮ ক্যারেটে খাদের পরিমাণ ২৫ শতাংশ।

কিন্তু বিক্রির ক্ষেত্রে এই সব ধরনের স্বর্ণের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ওজন বাদ যাবে সেক্ষেত্রে কিছুটা ক্ষতিতে পড়বেন ২২ ক্যারেট ও ২১ ক্যারেট স্বর্ণ বিক্রি করা ভোক্তারা।

এ ব্যাপারে মি. খান জানান, “২২ ক্যারেটের গহনা তৈরিতে খরচ বেশি হয় সেটাই আমরা পুষিয়ে নেই। মূলত খাদের দামটাই কেটে রাখা হয়।”

অন্যদিকে, সনাতন স্বর্ণের গহনায় বিশুদ্ধ স্বর্ণের পরিমাণ থাকে ১০ আনা বা তারও কম।

সাধারণত এতে রুপা, তামা, দস্তাসহ নানা ধরনের খাদ অনেক বেশি মাত্রায় মেশানো থাকে। এ কারণে এসব গহনায় ক্যারেট হিসাব থাকে না। খাদের মাত্রা একেক রকম হয়।

বিশুদ্ধতা কম ও অনির্দিষ্ট হওয়ায় সনাতন স্বর্ণ বিক্রির সময় শতাংশের হিসাব প্রযোজ্য হয় না।

এ অবস্থায় সনাতন স্বর্ণ গলালেই বোঝা যায় এতে কতটুকু খাঁটি স্বর্ণ আছে। সে অনুযায়ী দাম নির্ধারণ হয়।

বাজুসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগারওয়াল জানান, সনাতন স্বর্ণে ১২ থেকে ১৪ ক্যারেট থাকা উচিত। কিন্তু কখনও এতে নয় ক্যারেট থাকে, আবার কখনও ১৬ এমনকি ১৮ ক্যারেটও থাকতে পারে, কোন ঠিক নেই।

যারা ২০০৫ সালের আগে স্বর্ণ কিনেছেন, তাদেরকে অনেক সময় ২২ ক্যারেট বলে সনাতন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তখন স্বর্ণ পরীক্ষা করার কিছু ছিল না বলে জানিয়েছেন তিনি।

স্বর্ণে এই অতিরিক্ত ও অনির্দিষ্ট খাদ থাকার কারণ হিসেবে মি. খান জানান, আগে স্বর্ণের গহনা তৈরির ক্ষেত্রে কোনও নীতিমালা ছিল না। গহনার বিভিন্ন অংশকে তারা দস্তা গলিয়ে জোড়া দিতো। এভাবে স্বর্ণের মান ঠিক রাখা যেতো না।

“কিন্তু এখন স্বর্ণের বিভিন্ন অংশ জোড়া দিতে ক্যাডমিয়াম পাইন ধাতু ব্যবহার হয়। এই ধাতু জোড়া দেওয়ার পর উড়ে যায়। এতে স্বর্ণের মানে পরিবর্তন আসে না, ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ ২২ ক্যারেটই থাকে,” তিনি বলেন।

স্বর্ণ: বিক্রির সময় দাম কেটে রাখা হয় কেন? বিক্রির ক্ষেত্রে যা জানা জরুরি - BBC News বাংলা (4)

ছবির উৎস, Getty Images

স্বর্ণ বিক্রিতে লাভ আছে?

স্বর্ণ শুধু গহনা হিসেবে নয় বরং আর্থিক নিরাপত্তা, ভবিষ্যতের সঞ্চয় এমনকি সম্পদ বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবেও ব্যাপক জনপ্রিয়।

সংকট পরিস্থিতিতে সাধারণত সবচেয়ে প্রথম প্রভাব পড়ে শেয়ার বাজার, বন্ড ও মুদ্রার মূল্যে। স্বর্ণের বেলায় এমন ধস নামে না।

সেইসাথে তেল ও গ্যাসের মতো স্বর্ণ ফুরিয়ে যায় না। নানা হাত ঘুরে তা শেষ পর্যন্ত পৃথিবীতেই থাকে, অর্থাৎ স্বর্ণের স্থায়িত্ব আছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “এটি এমন এক বিনিয়োগ যা কিনলে ও জমিয়ে রাখলে বড় ক্ষতির আশঙ্কা থাকে না। তাই স্বর্ণ হয়ে ওঠে বিপদের বন্ধু”।

আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের মূল্যের ওঠানামা, তেলের দাম বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতিসহ নানা সংকটের কারণে স্বর্ণের দাম ওঠানামা করে।

স্বর্ণে বিনিয়োগের আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে, স্বর্ণের দাম বাড়লে বা কমলে তাতে আকাশ-পাতাল ফারাক হয় না। ফলে এটি ঝুঁকিমুক্ত।

সর্বশেষ ২০২৪ সালের পহেলা জুলাই নির্ধারিত দাম অনুযায়ী প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম এক লাখ ১৭ হাজার ২৮১ টাকা।

একইভাবে ২১ ক্যারেট সোনার ভরি এক লাখ ১১ হাজার ৯৫১ টাকা এবং ১৮ ক্যারেট ৯৫ হাজার ৯৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আর সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম দাঁড়াচ্ছে ৭৯ হাজার ৩৩৮ টাকা।

দুই যুগ আগে ২০০০ সালে ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের ভরি ছিল ছয় হাজার নয়শ টাকা। ২৪ বছর আগের সেই স্বর্ণ এখন যে দামে বিক্রি হচ্ছে, সেখান থেকে ১৫ শতাংশ বাদ দিলেও ১৪ গুণেরও বেশি টাকা পাওয়া যাবে।

আবার সনাতন স্বর্ণ বিক্রি করেও যথেষ্ট লাভের সুযোগ আছে বলে জানিয়েছেন বিক্রয়কর্মীরা।

যারা ২০ বছর আগে সনাতন স্বর্ণ কিনেছেন, তারা এখন সেগুলো বিক্রি করতে গেলেও কয়েক গুণ বেশি দাম পাবেন।

স্বর্ণ: বিক্রির সময় দাম কেটে রাখা হয় কেন? বিক্রির ক্ষেত্রে যা জানা জরুরি - BBC News বাংলা (5)

ছবির উৎস, Getty Images

যেখান থেকে স্বর্ণ কিনেছেন, সেখানেই বিক্রি

বাজুসের নির্দেশনায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, পুরনো স্বর্ণ কেউ যদি বিক্রি করতে চান, তাহলে তাকে ক্রয়ের রশিদ দিতে হবে।

এবং যে প্রতিষ্ঠান স্বর্ণ কিনবেন তাদের নিশ্চিত হতে হবে রশিদে উল্লেখিত প্রকৃত মালিক সেটা বিক্রি করছেন কি না।

এ ব্যাপারে বাজুসের নেতাদের পরামর্শ, যে দোকান থেকে স্বর্ণ কিনেছেন সেই দোকানে বিক্রির জন্য নিয়ে গেলে এবং স্বর্ণ কেনার রশিদ সাথে থাকলে কোনও ঝামেলা ছাড়াই অল্প সময়ে বিক্রি সম্পন্ন করা যাবে।

কেননা, যে দোকান থেকে কিনেছেন তারা নিজেদের স্বর্ণ কতটা খাঁটি, এবং স্বর্ণে কী পরিমাণ খাদ রয়েছে সে সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখেন।

এ কারণে স্বর্ণ কেনার পর এর রশিদ সাবধানে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

তবে বর্তমান নীতিমালার আওতায় ক্রয় রশিদ না থাকলে বা এক দোকানের স্বর্ণ অন্য দোকানে বিক্রি করলেও ন্যায্য দাম পাওয়া যাবে, স্বর্ণ বিশুদ্ধ হলে দামে তারতম্য হওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন বাজুসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগারওয়াল।

স্বর্ণ: বিক্রির সময় দাম কেটে রাখা হয় কেন? বিক্রির ক্ষেত্রে যা জানা জরুরি - BBC News বাংলা (6)

ছবির উৎস, Majority World

স্বর্ণ বিক্রির ক্ষেত্রে নিয়ম

বাজুস ২০০৭ সালে একটি হলমার্ক বাধ্যতামূলক করে। হলমার্কের মাধ্যমে মূলত স্বর্ণের বিশুদ্ধতা খোদাই করে নিশ্চিত করা হয়।

বাজার থেকে সনাতন স্বর্ণ এবং ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ তুলে দিয়ে মানসম্মত ২২ ও ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ কেনাবেচায় উৎসাহিত করাও এর আরেকটি লক্ষ্য বলে জানান বাজুসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মি. আগারওয়াল।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দেশে বার্ষিক সোনার চাহিদা ২০ থেকে ৪০ টন। এর মধ্যে ১০ শতাংশ পুরনো অলংকার থেকে পূরণ হয়। বাকিটা ব্যাগেজ রুলের আওতায় বিদেশ থেকে আসে।

তবে অভিযোগ রয়েছে বিদেশ থেকে পাচার হয়ে অনেক স্বর্ণ বাজারে ঢুকছে। আবার বাসাবাড়ি থেকে স্বর্ণ চুরি যাওয়া বা স্বর্ণের দোকান থেকে লুটপাট হওয়া নতুন বিষয় নয়।

এ ধরনের চুরি, ডাকাতি বা চোরাচালানের স্বর্ণ যাতে ক্রয় বিক্রয় করা না যায়, সেই লক্ষ্যে ২০২২ সালে একটি নির্দেশনা দিয়েছে বাজুস।

সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে কেউ পুরনো স্বর্ণ বা বিদেশ থেকে আনা স্বর্ণ বিক্রি করতে গেলে বিক্রেতার জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্টের কপি সংরক্ষণ সেইসাথে আরও কিছু নিয়মনীতি অনুসরণ করতে হবে যেন স্বর্ণের উৎসের ব্যাপারে পরিষ্কার থাকা যায়।

এ ব্যাপারে মি. খান বলেন, “আপনার বাসা থেকে কেউ স্বর্ণ চুরি করে বিক্রি করতে এলো। এটা তো অপরাধ। সরকার চোরাই স্বর্ণ কেনার কোনও অনুমতি দেয়নি। চুরি রোধ করার জন্য বিক্রেতার পরিচয়পত্র, ছবি, নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর রাখতে বলা হয়েছে।”

বর্তমানে বাংলাদেশে বিদেশ থেকে আগত একজন ব্যক্তি শুল্ক ও কর মুক্ত সুবিধায় সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালঙ্কার আনতে পারেন।

এছাড়া একজন যাত্রী ঘোষণা প্রদান সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১১৭ গ্রাম ওজনের সমপরিমাণ স্বর্ণের বার আনতে পারেন। এজন্য তাদের কাস্টমসে ঘোষণা দিতে হবে এবং স্বর্ণের বারের ক্ষেত্রে শুল্ক দিতে হবে। এর বেশি স্বর্ণ আনলেই সেটা অবৈধ বলে গণ্য হবে।

এ ধরনের স্বর্ণ যদি কেউ বিক্রি করতে আসে তাহলে বিক্রেতার পাসপোর্ট ও ভিসার ফটোকপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, এয়ারপোর্ট ডিক্লারেশন বা কর প্রদানের সার্টিফিকেট যাচাই করার কথা ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে।

তবে এই নিয়ম কতটা মানা হয় সেটা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বাজুসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মি. আগারওয়াল।

অনেকে স্বর্ণ বন্ধক রেখে ঋণও নেন, সেক্ষেত্রে ব্যাংকের মতো নিয়মিত সুদ পরিশোধ করতে হয়। বাংলাদেশ সরকারের লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান স্বর্ণ বন্ধক রাখতে পারে।

স্বর্ণ: বিক্রির সময় দাম কেটে রাখা হয় কেন? বিক্রির ক্ষেত্রে যা জানা জরুরি - BBC News বাংলা (7)

ছবির উৎস, Alison Joyce/Getty Images

স্বর্ণ: বিক্রির সময় দাম কেটে রাখা হয় কেন? বিক্রির ক্ষেত্রে যা জানা জরুরি - BBC News বাংলা (2024)

FAQs

স্বর্ণ বিক্রির সময় দাম কেটে রাখা হয় কেন বিক্রির ক্ষেত্রে যা জানা জরুরি? ›

তাই কারও যদি স্বর্ণ হলমার্ক করা থাকে তাহলে সেটি দেশে বিদেশে কোথাও বিক্রি করতে গেলে তার আর প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। এভাবে ক্যারেট নিশ্চিত হওয়ার পর সেটা ওজন করে নির্দিষ্ট অংশ কর্তন করে বর্তমান বাজার দাম হিসাব করে লেনদেন সম্পন্ন করা হয়

তিন আনা স্বর্ণের দাম কত? ›

আজকের সোনার দাম, ১৮ ক্যারেট সোনার দাম, ২১ ক্যারেট সোনার দাম, ২২ ক্যারেট সোনার দাম।
আজকের সোনার দাম কতসোনার দাম বাংলাদেশি টাকায়
আনা সোনার দাম১৫,২৬৫.২৫ টাকা
৩ আনা সোনার দাম২২,৮৯৭.৮৭ টাকা
আনা সোনার দাম৩০,৫৩০.৫ টাকা
আনা সোনার দাম৩৮,১৬৩.১২ টাকা
12 more rows
6 days ago

বাংলাদেশের 22 ক্যারেট স্বর্ণের দাম কত? ›

আজকের সোনার দাম BD Gold Price Today BDT

২১ ক্যারেট এক ভরি সোনার দাম ১,২২,১২২ টাকা (বর্তমান)। পূর্বে ছিলো ১,২০,০৮১ টাকা। ১ ভরিতে দাম বেড়েছে ২,০৪১ টাকা। ২২ ক্যারেট ১ ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ১,২৭,৯৪২ টাকা (বর্তমান)।

এক গ্রাম স্বর্ণের দাম কত? ›

কলকাতায় প্রতি গ্রাম 22 ক্যারেট সোনার দাম - (আজ ও গতকাল)
গ্রামআজদাম পরিবর্তন
সোনার হার ১ গ্রাম₹ 6,595₹ 28
সোনার হার ১ গ্রাম₹ 65,953₹ 284
সোনার হার ১ গ্রাম₹ 79,144₹ 341

আমার স্বর্ণের দাম কে বেশি দেয়? ›

আমরা সাধারণত সোনার গয়নাগুলির জন্য Abe Mor-এর সুপারিশ করি, কারণ তাদের ফি অন্যান্য সোনার ক্রেতাদের তুলনায় কম, অর্থাৎ আপনি যে সোনা বিক্রি করেন তার জন্য আপনি স্পট প্রাইসের বেশি শতাংশ পাবেন। যাইহোক, সেখানে অনেক অন্যান্য ক্রেতা আছে.

সোনার দাম কত আজকে 2024? ›

ঐতিহাসিক সোনার হার সালেম শেষ 10 দিনের জন্য
দিন22K খাঁটি সোনা24K খাঁটি সোনা
03 সেপ্টেম্বর, 2024₹ ৫,৮৬৮₹ ৫,৮৬৮
02 সেপ্টেম্বর, 2024₹ ৫,৮৬৮₹ ৫,৮৬৮
30 আগস্ট, 2024₹ ৫,৮৬৮₹ ৫,৮৬৮
29 আগস্ট, 2024₹ ৫,৮৬৮₹ ৫,৮৬৮
6 more rows

চার আনা সোনার চেইন দাম কত? ›

২১ ক্যারেট সোনার মূল্য তালিকা ২০২৪
২১ ক্যারেট সোনাআজকের দাম
আনা সোনার দাম১৩,২৪৪ টাকা
৪ আনা সোনার দাম২৬,৪৮৮ টাকা
আনা সোনার দাম৩৩,১১০ টাকা
আনা সোনার দাম৩৯,৭৩২ টাকা
2 more rows
May 2, 2024

আনার দাম কত? ›

আন্না (বা আন্না) ছিল একটি মুদ্রার একক যা পূর্বে ব্রিটিশ ভারতে ব্যবহৃত হত, এক টাকার 1⁄16 এর সমান। এটিকে চারটি পিস বা বারোটি পাই (এইভাবে একটি রুপিতে 192টি পাই) ভাগ করা হয়েছিল। যখন রুপি দশমিক করা হয়েছিল এবং 100 (নতুন) পয়সায় বিভক্ত হয়েছিল, তখন এক আনা ছিল 6.25 পয়সার সমতুল্য।

24 ক্যারেট সোনার বর্তমান দাম কত? ›

বেঙ্গালুরুতে আজকের সোনার দাম

বর্তমানে, ব্যাঙ্গালোরে সোনার দাম 22 ক্যারেট সোনার জন্য প্রতি গ্রাম ₹6581.60 এবং 24 ক্যারেট সোনার জন্য প্রতি গ্রাম ₹7185.10 , যা 999 সোনা নামেও পরিচিত।

২২ ক্যারেট সোনার নাম্বার কত? ›

22-ক্যারেট সোনাও বলা হয় 916 স্বর্ণ কারণ এতে 91.67% শতাংশের সাথে খাঁটি সোনা রয়েছে।

সোনা কত ভরি? ›

এক তোলা (ভারত) বা বোরি বা ভোরি 11.66 গ্রামের সমতুল্য। এক টোলা (পাকিস্তান) 12.5 গ্রামের সমান। আমরা জানি যে সোনার নিসাব থ্রেশহোল্ড হল 87.48 গ্রাম, তাই এটি 7.5 টোলা (ভারত), ভোরিস, বা ভোরিস বা 7 টোলা (পাকিস্তান) এর সমতুল্য।

১ ভরি সোনার দাম কত? ›

একটি ভোরি, সোনার পরিমাপের একটি ঐতিহ্যগত একক যা সাধারণত মহারাষ্ট্র এবং গুজরাটের মতো অঞ্চলে ব্যবহৃত হয়, 11.664 গ্রামের সমতুল্য।

22 ক্যারেট সোনার দাম পুনে? ›

পুনেতে আজকের সোনার দাম

বর্তমানে, পুনেতে সোনার দাম 22 ক্যারেট সোনার জন্য প্রতি গ্রাম ₹6666.80 এবং 24 ক্যারেট সোনার জন্য প্রতি গ্রাম ₹7278.10, যা 999 সোনা নামেও পরিচিত। একজন বিনিয়োগকারী বা সোনা কিনতে আগ্রহী কেউ হিসাবে, দৈনিক সোনার দামের উপর নজর রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আজকের কলকাতায় 22 ক্যারেট সোনার দাম কত? ›

কলকাতায় আজকের সোনার দাম

বর্তমানে, কলকাতায় সোনার দাম 22 ক্যারেট সোনার জন্য প্রতি গ্রাম ₹6648.70 এবং 24 ক্যারেট সোনার জন্য প্রতি গ্রাম ₹7258.40, যা 999 সোনা নামেও পরিচিত।

সোনা বিক্রির সময় কিভাবে ওজন করা হয়? ›

সোনার ওজন ট্রয় আউন্সে পরিমাপ করা যেতে পারে, যা সবচেয়ে সাধারণ এবং সুনির্দিষ্ট, সেইসাথে গ্রাম এবং ক্যারেট । সোনা সাধারণত এই ওজন পরিমাপের পরিপ্রেক্ষিতে বিক্রি হবে। সোনার বিশুদ্ধতা ক্যারাটে পরিমাপ করা হয়, যেখানে চব্বিশ ক্যারেট সোনা 100% খাঁটি।

সোনা বিক্রির সময় প্রতারিত না হওয়ার উপায়? ›

স্বর্ণ বিক্রি করার সময় লোকেরা যে ভুল করে তা একাধিক মূল্যায়ন পাচ্ছে না। আপনি সঠিক মূল্য পাচ্ছেন তা নিশ্চিত করতে একাধিক বিশেষজ্ঞের দ্বারা আপনার সোনার মূল্যায়ন করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনাকে ক্রেতাদের দ্বারা প্রতারিত হওয়া এড়াতে সাহায্য করতে পারে যারা আপনাকে আপনার সোনার জন্য কম দামের প্রস্তাব দেয়।

স্বর্ণের দাম কিভাবে বের করে? ›

তাই 1 গ্রাম সোনার দাম গণনা করার জন্য, সোনার আইটেমের বিশুদ্ধতা শতাংশ দ্বারা প্রতি গ্রাম বর্তমান সোনার হারকে গুণ করুন। উদাহরণস্বরূপ, যদি বর্তমান সোনার হার হয় ₹4,000 প্রতি গ্রাম এবং সোনার আইটেমটি 22-ক্যারেট (91.6% খাঁটি), তাহলে 1 গ্রামের দাম হবে ₹4,000 × 0.916 = ₹3,664।

স্বর্ণ বিক্রির সময় কি আশা করা যায়? ›

যাইহোক, আপনি সাধারণত আপনার গহনার জন্য বর্তমান সোনার মূল্যের 50% এবং 90% এর মধ্যে পাওয়ার আশা করতে পারেন। আপনার গয়না যদি পুরানো হয় বা ঐতিহাসিক তাত্পর্য থাকে তবে আপনি এটির জন্য আরও বেশি পেতে সক্ষম হতে পারেন।

Top Articles
Netflix's 6 Underground Cast & Character Backstory Guide
A coal mine fire has been burning for five days in central Queensland. There is only one way to put it out
Steve Bannon Issues Warning To Donald Trump
The Civil Rights Movement: A Very Short Introduction
Thedirtyship
The Phenomenon of the Breckie Hill Shower Video Understanding Its Impact and Implications - Business Scoop
Arcanis Secret Santa
Die Skihallen in Deutschland im Überblick
Look Who Got Busted New Braunfels
Deep East Texas Farm And Garden - By Owner
Anonib Altoona Pa
In a nutshell - About UM
Schmidt & Schulta Funeral Home Obituaries
Smart fan mode msi, what's it for and does it need to be activated?
Food And Grocery Walmart Job
Ingersoll Greenwood Funeral Home Obituaries
Nancy Pazelt Obituary
Sandra Sancc
The Obscure Spring Watch Online Free
Last minute moving service van local mover junk hauling pack loading - labor / hauling / moving - craigslist
Th 8 Best Army
55000 Pennies To Dollars
Chrysler, Dodge, Jeep & Ram Vehicles in Houston, MS | Eaton CDJR
Idaho Falls Temple Prayer Roll
Dollar Tree Hours Saturday
Duen Boobs
Lucky Dragon Net
Nsa Panama City Mwr
Algebra 1 Unit 1 Interactive Notebook Pages – The Foundations of Algebra
Citymd West 146Th Urgent Care - Nyc Photos
Hewn New Bedford
Holley Gamble Funeral Home In Clinton
Best Boxing Gyms Near Me
Sam's Club Near Me Gas Price
O'reilly's In Monroe Georgia
Swissport Timecard
Heffalumps And Woozles Racist
Arcane Stitch Divinity 2
Mere Hint Crossword
Rydell on LinkedIn: STARTING TODAY you no longer have to wait in a long line to get your oil…
Accuradio Unblocked
Cvs On 30Th And Fowler
Busted Bell County
Mama Mia Israel Soldier Original
Cb2 South Coast Plaza
How Big is a 4×6 Photo?(Inch, cm, mm, Ft, Pixels) - PhotographyAxis
Ucla Outlook Web Access
Gwcc Salvage
Online-Shopping bei Temu: Solltest du lieber die Finger davon lassen?
Saulr80683
Closest Asian Supermarket
Items For Sale in Le Mars, IA
Latest Posts
Article information

Author: Errol Quitzon

Last Updated:

Views: 6223

Rating: 4.9 / 5 (59 voted)

Reviews: 82% of readers found this page helpful

Author information

Name: Errol Quitzon

Birthday: 1993-04-02

Address: 70604 Haley Lane, Port Weldonside, TN 99233-0942

Phone: +9665282866296

Job: Product Retail Agent

Hobby: Computer programming, Horseback riding, Hooping, Dance, Ice skating, Backpacking, Rafting

Introduction: My name is Errol Quitzon, I am a fair, cute, fancy, clean, attractive, sparkling, kind person who loves writing and wants to share my knowledge and understanding with you.